গাছের সঙ্গে গাছের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বা গাছের সঙ্গে অন্য জীবের যোগাযোগের ক্ষেত্রে শুধু যে কিছু উদ্বায়ী জৈব রাসায়নিক যৌগ দায়ী, তা নয়। আরও অনেক বিষয় এর সঙ্গে রয়েছে। যেমন গাছেদের মধ্যে একধরনের বৈদ্যুতিক সংকেত আদান-প্রদানের রীতিও দেখা যায়। আমরা যেমন চিমটি খেলে ‘উহ’ করে উঠি, চিমটির সে ব্যথা সঙ্গে সঙ্গে সংকেত পাঠিয়ে দেয় মস্তিষ্কে। ঠিক সেরকমই গাছেরও অনুভূতি রয়েছে। গাছ সূর্যের আলোর দিকে মুখ করে থাকে, পাতাদের এমনভাবে সাজায় যেন পাতাগুলো রোদ বা আলো পায় ও খাদ্য তৈরি করতে পারে। গাছের আমাদের মতো সুগঠিত স্নায়ুতন্ত্র নেই। তবে তারা পাতা থেকে শাখায়, শাখা থেকে কুঁড়িতে, কুঁড়ি থেকে ফুলের পাঁপড়িতে সংকেত পাঠায়। কোনো ঘটনা ঘটলে গাছ সে কথা শিকড়কেও বলে। শিকড় তখন সেই মতো ব্যবস্থা নেয়। পুরো ব্যাপারটা ঘটে একধরনের বৈদ্যুতিক সংকেত প্রদান প্রবাহতন্ত্রের মাধ্যমে। সেই আঠারো শতকেই বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন সে কথা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। তার মাথায় কিছুতেই আসছিল না যে কলস উদ্ভিদের বা ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ গাছের ঢাকনাগুলো কেন মাছি বসার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। সংকেতে কীভাবে গাছেরা বুঝতে পারে? আবার সেসব মাছিদের আটকে মেরে তা বেমালুম হজমও করে ফেলে। পতঙ্গভূক উদ্ভিদগুলোর নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের এ রহস্য সত্যিই বিস্ময়কর।